• [english_date] , [bangla_date] , [hijri_date]

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত August 28, 2019
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

আজ ১২ ভাদ্র। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। ৪৩ বছর আগে এই দিনে ঢাকার তৎকালীন পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল) ৭৭ বছর বয়সে এই মহৎপ্রাণ কবির জীবনাবসান ঘটে। বাংলা সাহিত্যে তার অবদান অসামান্য। অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদী ও সাম্যের এই কবি আছেন কোটি কোটি বাঙালির হৃদয়ে। জীবদ্দশায় তিনি সর্বদা হিন্দু-মুসলমান মিলনের গান গেয়েছেন। তার ইসলামি সঙ্গীত ও গজল আজও  মানুষের হৃদয় কাড়ে। পাশাপাশি তিনি সিদ্ধহস্ত ছিলেন শ্যামাসঙ্গীত রচনার ক্ষেত্রেও। বিদ্রোহী কবির মর্যাদা পেলেও তিনি ছিলেন মূলত প্রেমের কবি। কাজী নজরুল ইসলামই এ দেশের সমাজচেতনা ও রাজনৈতিক জগতের সর্বোত্তম কবি, যিনি গণমানুষের সঙ্গে সাহিত্যের যোগসূত্র। 

তার লেখনী জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে। তার কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার গান ও কবিতা ছিল প্রেরণার উৎস।

কাজী নজরুল ইসলাম নিজ গ্রামে মসজিদ ও স্কুলে অধ্যয়ন করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি কবিতা ও গান লেখা শুরু করেন। নিজে বিভিন্ন আসরে গান পরিবেশন করেন। তার কবিতা ক্রমে ব্রিটিশদের শোষণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদী ও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তার বিদ্রোহী কবিতায় সরাসরি ব্রিটিশ রাজকে সমালোচনা করা হয়।

দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত হয়েও কবি কখনো আপস করেননি। মাথা নত করেননি লোভ-লালসা, খ্যাতি, অর্থ, বিত্তবৈভবের কাছে। আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির জন্য। মানবতার মুক্তির পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার, কূপমণ্ড‚কথার বিরুদ্ধেও ছিলেন সোচ্চার। মুক্তবুদ্ধি ও চিন্তার পক্ষে কলম ধরেছেন নির্ভীক চিত্তে। তার রচিত ‘চল্ চল্ চল্’ গানটি আমাদের রণসঙ্গীত।

ছোটগল্প, উপন্যাস, গান, নাটক লিখলেও মূলত কবি হিসেবেই তিনি বেশি পরিচিত। আজীবন বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গি আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার উচ্চকণ্ঠের কারণে তিনি ভূষিত হন ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে অগ্নিবীণা, সঞ্চিতা, চক্রবাক, প্রলয় শিখা, মরু ভাস্কর, দোলনচাঁপা, বিষের বাঁশি, ভাঙ্গার গান, সাম্যবাদী, পুবের হাওয়া, ব্যথার দান, রিক্তের বেদন, বাঁধনহারা, মৃত্যুক্ষুধা, কুহেলিকা ইত্যাদি। এ ছাড়া প্রায় ৩ হাজার গান রচনা করেন কাজী নজরুল। তার গানের বাণী হয়ে ওঠে মানবতাবাদ ও সাম্যবাদের পক্ষে শক্তিশালী হাতিয়ার। যদিও মধ্য বয়সে নজরুল রোগাক্রান্ত হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পরই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে স্বপরিবারে সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বাংলাদেশে তার বসবাসের ব্যবস্থা করেন। ধানমন্ডিতে কবির বসবাসের জন্য একটি বাড়ি প্রদান করেন বঙ্গবন্ধু।

কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানী ঢাকা, কবির স্মৃতিধন্য ময়মনসিংহের ত্রিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পালিত হচ্ছে নানা কর্মসূচি। আজ মঙ্গলবার ভোরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশে কবির সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানিয়েছেন কবির ভক্ত ও অনুরাগীরা।

ঢাকায় বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দল নানা কর্মসূচি পালন করবে। এর মধ্যে রয়েছে সকালে কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে।

Sharing is caring!

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031