• [english_date] , [bangla_date] , [hijri_date]

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কেন ভিন্ন

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত October 15, 2020
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কেন ভিন্ন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিশ্বের একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী ব্যক্তি। যুদ্ধ, মহামারি বা জলবায়ু পরিবর্তনের মতো কোন আন্তর্জাতিক সংকটের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট কী ভুমিকা রাখছেন তার প্রভাব অপরিসীম।

এ কারণেই প্রতি চার বছর পরপর যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘনিয়ে আসে, তখন এর ফলাফল কী হবে তা নিয়ে সারা পৃথিবীতেই তৈরি হয় ব্যাপক আগ্রহ।

তবে এটাও ঠিক যে এই নির্বাচনের প্রক্রিয়াটা ঠিক কীভাবে কাজ করে তা অনেকেই হয়তো পুরোপুরি বুঝতে পারেননা।

এমনকি বিবিসির সংবাদ বিভাগে আমরা যারা কাজ করি – তাদেরও সবসময় মাথায় রাখতে হয়, ইলেকটোরাল কলেজ কীভাবে কাজ করে বা ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেট’ কাকে বলে – এসব বিষয়গুলো।

এ কারণেই আমরা তৈরি করেছি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য এই সরল গাইড – যাতে যিনি প্রথমবার ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করছেন তার একটু সুবিধে হয়।

আর যারা অভিজ্ঞ, তারাও এই সুযোগে তাদের জানা বিষয়গুলোকে নতুন করে একবার ঝালিয়ে নিতে পারেন।

নির্বাচন কবে হবে? প্রার্থী কারা?

আমেরিকায় নির্বাচন হয়ে থাকে প্রতি চার বছর পরপর, এবং সেই বছরের নভেম্বর মাসের প্রথম সোমবারের পর যে মঙ্গলবার পড়ে – সেদিনই হয় ভোটগ্রহণ।

সবসময়ই এভাবেই নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত হয়ে আসছে এবং সেই হিসেবে এবছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে যাচ্ছে ৩রা নভেম্বর।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি অন্য অনেক দেশের চাইতে বেশ আলাদা। এখানে রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সবচেয়ে প্রভাবশালী দল মাত্র দুটি।

কাজেই প্রেসিডেন্ট প্রায় সব সময়ই এই দুটি দলের কোন একটি থেকে আসেন।

অবশ্য ছোট ছোট কিছু রাজনৈতিক দল – যেমন লিবার্টারিয়ান, গ্রীন, ইন্ডিপেনডেন্ট পার্টি – তারাও কখনো কখনো প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী মনোনয়ন ঘোষণা করে।

রিপাবলিকান পার্টি

বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হচ্ছেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী – যা একটি রক্ষণশীল রাজনৈতিক দল।

মি. ট্রাম্প ২০১৬ সালের নির্বাচনে জিতে ক্ষমতাসীন হয়েছেন এবং তিনি এবার আরো চার বছরের জন্য পুননির্বাচিত হবার লড়াইয়ে নেমেছেন।

রিপাবলিকান পার্টি ‘গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি’ নামেও পরিচিত। সাম্প্রতিককালে রিপাবলিকান পার্টির নীতি ছিল করের হার কমানো, বন্দুক রাখার অধিকার এবং অভিবাসনের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের পক্ষে।

সাধারণভাবে দেখা যায়, আমেরিকার অপেক্ষাকৃত গ্রামীণ এলাকাগুলোতে রিপাবলিকান পার্টির সমর্থন বেশি জোরালো।

রিপাবলিকান পার্টির পূর্বতন প্রেসিডেন্টদের মধ্যে আছেন জর্জ ডব্লিউ বুশ, রোনাল্ড রেগান এবং রিচার্ড নিক্সন।

ডেমোক্র্যাটিক পার্টি

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি হচ্ছে উদারনৈতিক রাজৗনৈতিক দল। এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাদের প্রার্থী জো বাইডেন।

তিনি একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ এবং বারাক ওবামা যখন আট বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন মি. বাইডেনই ছিলেন তার ভাইস প্রেসিডেন্ট।

ডেমোক্র্যাটিক পার্টি পরিচিত নাগরিক অধিকার, অভিবাসন, এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়ে তার উদারনৈতিক অবস্থানের জন্য। তারা মনে করে, স্বাস্থ্য বীমার সুযোগ দেবার মতো জনগণের জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের আরো বড় ভূমিকা পালন করা উচিত।

আমেরিকার শহর অঞ্চলগুলোতে ডেমোক্যাটিক পার্টির সমর্থন জোরালো বলে দেখা যায়। সাবেক ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্টদের মধ্যে আছেন জন এফ কেনেডি, বিল ক্লিনটন এবং বারাক ওবামা।

এবারের নির্বাচনে দুই প্রার্থীরই বয়স ৭০এর বেশি।

যদি মি. ট্রাম্প পুননির্বাচিত হন, তাহলে দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতে তার বয়স হবে ৭৪,।

আর যদি মি. বাইডেন বিজয়ী হন – তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তিনিই হবেন প্রথম মেয়াদে নির্বাচিতদের মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট।

কীভাবে জয়পরাজয় নির্ধারিত হয়?

অন্য অনেক দেশের নির্বাচনেই দেখা যায় – যে প্রার্থী বেশি ভোট পান তিনিই প্রেসিডেন্ট হন।

কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সব সময় তা নাও হতে পারে।

কারণ মার্কিন নির্বাচনী পদ্ধতিকে বলা যায় ‘পরোক্ষ’ ভোট ব্যবস্থা – যা অনেকের কাছে একটু জটিল মনে হতে পারে।

এখানে একজন ভোটার যখন তার পছন্দের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন, তখন তিনি আসলে ভোট দিচ্ছেন তার অঙ্গরাজ্য-ভিত্তিক নির্বাচনী লড়াইয়ে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হতে হলে প্রার্থীকে আসলে দু’ধরণের ভোট জিততে হয়। একটি হচ্ছে ‘পপুলার’ ভোট বা সাধারণ ভোটারদের ভোট।

আরেকটি হচ্ছে ‘ইলেকটোরাল কলেজ’ নামে এক ধরণের নির্বাচকমন্ডলীর ভোট।

নির্বাচনের প্রার্থীরা আসলে এই ইলেকটোরাল ভোট জেতার জন্যই লড়াই করেন।

কোনো নির্বাচন ব্যবস্থাই সম্পূর্ণ নিখুঁত নয় – এই ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতিরও দোষ-গুণ দুটোই আছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে এই পদ্ধতিকে ব্যাপক সম্মানের চোখে দেখা হয়, কারণ এর সাথে দেশটির প্রতিষ্ঠার ইতিহাসের সংযোগ আছে।

তাছাড়া সাধারণত: এতে জনগণের ইচ্ছারই প্রতিফলন ঘটে থাকে। যদিও গত পাঁচটি নির্বাচনের দুটিতেই এ পদ্ধতি ঠিক কাজ করেনি।

এর সর্বসাম্প্রতিক দৃষ্টান্ত হচ্ছেন হিলারি ক্লিনটন – যিনি ২০১৬ সালের নির্বাচনে মি. ট্রাম্পের চাইতে প্রায় ৩০ লক্ষ পপুলার ভোট বেশি পেলেও প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি।

কোন্ অঙ্গরাজ্যের কতগুলো ইলেকটোরাল ভোট?

যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলোর জনসংখ্যার ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়ে থাকে এই ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা।

যে অঙ্গরাজ্যে জনসংখ্যা বেশি, তার ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যাও বেশি।

মোট ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা হচ্ছে ৫৩৮।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হতে গেলে একজন প্রার্থীকে অন্তত: ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট পেতে হবে।

একেকটি অঙ্গরাজ্যের ইলেকটোরাল কলেজ সেই রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারদের রায় অনুযায়ী ভোট দিয়ে থাকে।

একটি রাজ্যে যে প্রার্থী সবচেয়ে বেশি পপুলার ভোট পান – তিনি ওই রাজ্যের সবগুলো ইলেকটোরাল ভোট পেয়ে যান। অবশ্য দুটি রাজ্যের ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম আছে।

এভাবে একেকটি রাজ্যের ইলেকটোরাল ভোট যোগ হতে হতে যে প্রার্থী ২৭০ পার হন – তিনিই হন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

হিলারি ক্লিনটনের ক্ষেত্রে ২০১৬ সালে যা হয়েছিল তা হলো – তিনি নিউইয়র্ক এবং ক্যালিফোর্নিয়ার মতো ডেমোক্র্যাটিক-প্রধান অঙ্গরাজ্যগুলোতে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়েছিলেন।

কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প অন্য কয়েকটি তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ রাজ্যে জয়ী হন, যার ফলে তিনি মোট ৩০৪টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পান – যা ছিল হিলারি ক্লিনটনের পাওয়া ২২৭টি ইলেকটোরাল ভোটের চেয়ে অনেক বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ রাজ্যই চিরাচরিতভাবে ‘রিপাবলিকান’ বা ‘ডেমোক্র্যাট’ বলে চিহ্নিত হয়ে গেছে।

তাই প্রার্থীরা প্রচারণার সময় এমন ১০-১২টি রাজ্যের দিকে মনোযোগ দিয়ে থাকেন – যেগুলো ঠিক নির্দিষ্ট কোন দলের সমর্থক হিসেবে পরিচিত নয় এবং যে কোন দলই জিতে যেতে পারে।

এগুলোকেই বলে ‘ব্যাটলগ্রাউন্ড’ স্টেট – অর্থাৎ আমেরিকান প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আসল লড়াই হয় এ রাজ্যগুলোতেই।

কে ভোট দিতে পারেন, এবং কীভাবে?

আপনি যদি একজন মার্কিন নাগরিক হন এবং আপনার বয়স ১৮ বা তার বেশি হয়, তাহলে আপনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন।

তবে অনেক রাজ্যেই আইন করা হয়েছে যে শুধু উপযুক্ত হলেই হবে না, ভোট দেবার আগে তাদের পরিচয়পত্র দেখাতে হবে।

প্রায় ক্ষেত্রেই এসমস্ত আইন করেছে রিপাবলিকানরা, এবং তাদের যুক্তি হলো, ভোট জালিয়াতি ঠেকাতে এসব আইন দরকার।

কিন্তু ডেমোক্র্যাটরা অভিযোগ করেছে যে ভোটারদের দমনের জন্য এসব আইন ব্যবহার করা হয়, কারণ প্রায়ই দরিদ্র বা সংখ্যালঘুরা ড্রাইভিং লাইসেন্সের মতো পরিচয়পত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়।

কারাবন্দীদের ভোট দেবার ক্ষেত্রেও রাজ্যগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন আইন আছে।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে ভোট দেবার অধিকার হারায়, কিন্তু সাজা ভোগ করার পর তারা আবার ভোটাধিকার ফেরত পায়।

ভোটাররা সাধারণত: নির্বাচনের দিন কোন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে থাকে।

তবে সাম্প্রতিককালে বিকল্প পন্থায় ভোট দেবার সংখ্যা বাড়ছে। যেমন, ২০১৬ সালে মোট ভোটের ২১ শতাংশই দেয়া হয়েছিল ডাকযোগে।

২০১৬ সালে ২৪ কোটি ৫০ লাখ লোক ভোটদানের উপযুক্ত ছিলেন, কিন্তু আসলে ভোট পড়েছিল ১৪ কোটিরও কম।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যারা নিবন্ধিত হননি তারা বলেছিলেন তারা রাজনীতিতে আগ্রহী নন। আর যারা নিবন্ধিত হয়েও ভোট দেননি তারা বলেছিলেন, কোন প্রার্থীকেই তাদের পছন্দ হয়নি।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে কীভাবে লোক ভোট দেবে তা আমেরিকায় এক বিতর্কিত ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।

কিছু রাজনীতিবিদ ডাকযোগে ভোটদান পদ্ধতিকে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছেন।

কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলছেন, এর ফলে ভোটার জালিয়াতি বেড়ে যেতে পারে, যদিও এর পক্ষে প্রমাণ খুবই সামান্য।

এ নির্বাচন কি শুধু কে প্রেসিডেন্ট হবেন তা ঠিক করার জন্যই?

না। যদিও সংবাদ মাধ্যমের বেশি মনোযোগ ট্রাম্প-বাইডেন লড়াইয়ের দিকেই, কিন্তু একই সাথে ভোটাররা মার্কিন কংগ্রেসের নতুন সদস্য নির্বাচনের জন্যও ভোট দেবেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভাকে বলে কংগ্রেস। এটি দুই কক্ষবিশিষ্ট – নিম্নকক্ষকে বলে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ বা প্রতিনিধি পরিষদ, আর উচ্চকক্ষকে বলে সেনেট।

প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যরা নির্বাচিত হন দুই বছরের জন্য। অন্যদিকে সেনেট সদস্যদের মেয়াদ ছয় বছরের, এবং তারা তিন ভাগে বিভক্ত। ফলে দু’বছর পরপর সেনেটের এক-তৃতীয়াংশ আসনে ভোট হয়।

এবছর প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫টি আসনের সবগুলোতেই নির্বাচন হচ্ছে, আর সেনেট নির্বাচন হচ্ছে ৩৩টি আসনে।

বর্তমানে প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ হচ্ছে ডেমোক্র্যাটরা, আর সেনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেন রিপাবলিকানরা।

ডেমোক্র্যাটরা এবার চাইছেন নিম্নকক্ষে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে, পাশাপাশি সেনেটেরও নিয়ন্ত্রণ নিতে।

যদি তারা উভয় কক্ষেই এবার সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যান, তাহলে তারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পুননির্বাচিত হলেও তার পরিকল্পনাগুলো আটকে দিতে বা বিলম্বিত করতে সক্ষম হবেন।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল কবে জানা যাবে?

ভোট গণনা শেষ হতে কয়েক দিন লেগে যেতে পারে, তবে সাধারণত ভোটের পরদিন ভোর হতে হতেই কে বিজয়ী হতে যাচ্ছেন তা স্পষ্ট হয়ে যায়।

যেমন, ২০১৬ সালের ভোটের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প নিউইয়র্কে তার বিজয়ীর ভাষণ দিয়েছিলেন ভোররাত তিনটের দিকে, উল্লসিত সমর্থকদের সামনে একটি মঞ্চে দাঁড়িয়ে।

তবে এটা জেনে আপনি আবার আগেভাগেই ঘড়িতে এ্যালার্ম দিয়ে রাখবেন না যেন। মার্কিন কর্মকর্তারা ইতোমধ্যেই হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন যে এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল জানতে হয়তো কয়েক দিন বা সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। এর কারণ – এবার ডাকযোগে দেয়া ভোটের সংখ্যা অনেক বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ডাকযোগে ভোট দিতে হলে অনেক রাজ্যেই ভোটারদের একটা কারণ দেখাতে হয়। কিছু কিছু অঙ্গরাজ্য করোনাভাইরাস সংক্রমণকে একটা গ্রহণযোগ্য কারণ হিসেবে মেনে নিয়েছে – তবে সবাই নয়।

সবশেষ যে নির্বাচনে ফলাফল পেতে দেরি হয়েছিল তা হলো ২০০০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।

সেবার রিপাবলিকান প্রার্থী জর্জ বুশ ও ডেমোক্র্যাট অ্যাল গোরের মধ্যে এত তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছিল যে তা শেষ পর্যন্ত গিয়ে ঠেকেছিল ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের ভোট গণনায়। দুই প্রার্থীর মধ্যে মাত্র কয়েকশ’ ভোটের ফারাক ছিল।

এ নিয়ে শুরু হয় কয়েক সপ্তাহব্যাপী আইনী যুদ্ধ, যার পরিণামে ভোট পুনর্গণনা করতে হয়। শেষ পর্যন্ত ব্যাপারটা সুপ্রিম কোর্টে গড়ায়।

অবশেষে মি. বুশকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়, ফলে তিনি ফ্লোরিডা রাজ্যের ২৫টি ইলেকটোরাল ভোটের সবগুলো পেয়ে যান। তাতে তার মোট ইলেকটোরাল ভোট দাঁড়ায় ২৭১ এবং বিজয় নিশ্চিত হয়। মি. গোর পপুলার ভোট বেশি পেলেও পরাজয় স্বীকার করে নেন।

বিজয়ী প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায় অভিষিক্ত হবেন কবে?

যদি জো বাইডেন বিজয়ী হন – তাহলেও তিনি সঙ্গে সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্থলাভিষিক্ত হতে পারবেন না।

এর কারণ: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নেতার ক্ষমতাসীন হবার আগে একটা নির্দিষ্ট অন্তর্বতীকালীন সময়সূচী আছে।

এর লক্ষ্য হলো নতুন প্রেসিডেন্টকে তার পরিকল্পনা তৈরি করা এবং মন্ত্রিসভা নিয়োগ করার জন্য সময় দেয়া।

নতুন প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করেন ২০শে জানুয়ারি।

রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনের সামনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে নতুন প্রেসিডেন্টে অভিষেক হয়।

এ অনুষ্ঠানের পরই নতুন প্রেসিডেন্ট হোয়াইট হাউসে যান তার চার বছরব্যাপি মেয়াদ শুরু করার জন্য।

বিবিসি / হাকালুকি

Sharing is caring!

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031